তোমার কলেজে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র

তোমার কলেজে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখ।
অথবা, 

তোমার কলেজে একুশে ফেব্রুয়ারি কিভাবে পালন করেছ তা জানিয়ে বন্ধুকে একটি পত্র লেখ

একুশে ফেব্রুয়ারি, 21 Fabruary




কলেজ হোস্টেল, চাঁদপুর

২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

সুপ্রিয়, “ম”

আমার প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিও। তোমার পত্র পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। আমাদের কলেজে কীভাবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপিত হয়েছে তা তুমি জানতে চেয়েছ। এ বিষয়ে অবগত করানোর জন্য আজকের লেখা।


অমর একুশে আমাদের জাতীয় জীবনে এমনকি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রতিবছর সারাবিশ্বে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। জাতীয় জীবনে একুশ কেবল একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবসই নয়, একুশ আমাদের চেতনা, একুশ আমাদের গৌরব। এদিনে বাংলার কোটি কোটি আবালবৃদ্ধবনিতার মনে যে আভূতপূর্ব চেতনার সঞ্চার হয় তার ঢেউ আসে আছড়ে পড়ে আমাদের কলেজেও। দিবসটির উদযাপন যাতে সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ সচেতন ছিলেন। একুশ উদযাপন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বরাবরের মতো কলেজ ছাত্র সংসদের উপর বর্তালেও শিক্ষক মহোদয়গণ উদারভাবে ছাত্রদের সহযোগিতা করেন। তাঁদের সুপরামর্শে মহান একুশে দিবসটি স্বকীয়তার সমুজ্জ্বল হয়ে উঠে।


আগের দিন অর্থাৎ বিশ ফেব্রুয়ারির পড়ন্ত বিকেলে কলেজ সংসদের সদস্যগণ কলেজের শহীদ প্রাঙ্গণে মিলিত হয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনার নির্দেশিকা প্রস্তুত করেন এবং এতে কার কী দায়িত্ব তা বুঝিয়ে দেন। এ দিনই শহীদ মিনারকে ধুয়ে-মুছে পরিস্কার করা হয়। মিনারের অনতিদূরে তৈরি করা হয় আলোচনা মঞ্চ। রাত ১২ টা ১ মিনিটে মাননীয় অধ্যক্ষ মহোদয় শিক্ষকমন্ডলী এবং ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করে শ্রদ্ধার্ঘ জানায়। পর দিন অর্থাৎ একুশ তারিখের কাকডাকা ভোরে এলাকার অনেক ছাত্রছাত্রী এবং সচেতন জনগণ নগ্মপদে ফুলের তোড়া নিয়ে দলে দলে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে আসেন। মুখে তাদের সেই অমর সঙ্গীত –


“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি

আমি কি ভুলিতে পারি।”


পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সকাল আটটায় শুরু হয় একুশ উপলক্ষে সারগর্ভ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আনুষ্ঠান। অধ্যক্ষ মহোদয়ের সভাপতিত্বে শুরু হয় আলোচনা-পর্ব। আমাদের জাতীয় জীবনে একুশের তাৎপর্য এবং এর প্রভাব সম্পর্কে শ্রদ্ধেয় অধ্যাপকগণ জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য প্রদান করেন। কলেজের বেশ কয়েকজন কৃতী ছাত্রছাত্রীও এ আলোচনায় অংশ নেন। সবশেষে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ মহোদয়। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে ছিল সঙ্গীতানুষ্ঠান। একুশের গান, দেশাত্মবোধক গান এবং গণসঙ্গীতের মূর্ছনায় দিবসটি হয়ে উঠেছিল যেমিন বেদনাবিধুর তেমনি আনন্দঘন। দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে আমি সেদিন পুরস্কার পেয়েছিলাম। জীবনে বারবার হয়ত একুশ আসবে কিন্তু এ দিনটি চিরদিনই আমার কাছে ব্যতিক্রম হয়ে থাকবে। তোমরা কিভাবে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করলে তা জানালে খুশি হব। তোমার সর্বময় মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।



ইতি

তোমার প্রীতিমুগ্ধ

“এ”

Post a Comment

Support Us