ছাত্র রাজনীতির কুফল জানিয়ে তোমার ছোট ভাইকে একটি পত্র লেখ

 ছাত্রজীবনে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়ানোর কুফল সম্বন্ধে উপদেশ দিয়ে ছোট ভাইকে একখানা পত্র লেখ।
অথবা, ছাত্র রাজনীতির কুফল জানিয়ে তোমার ছোট ভাইকে একখানি পত্র লেখ।

 

যাত্রাবাড়ী, ঢাকা

০০ মার্চ ০০০৮

 

স্নেহের “অ”

 স্নেহশিস নিও। আশা করি ভালো আছ। গতকাল মা’র চিঠি পেলাম। চিঠিতে তোমার রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা জানতে পেরে আমি চিন্তিত। কেননা ছাত্রজীবন যথার্থ শিক্ষা লাভের সময়। ছাত্ররাই মূলত দেশের ভবিষৎ কর্ণধার। ছাত্রদের উপর নির্ভার করে একটি দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি। রুটিন মোতাবেক লেখাপড়া, শরীর গঠন, জ্ঞানার্জন, চরিত্র গঠন, সর্বোপরি একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠার সময়ই হলো ছাত্রজীবন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তোমাদের মতো কোমলমতি ছাত্রদেরকে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে ঘোর অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে মেধাবী ছত্রদের ভবিষ্যৎ জীবন। নোংরা ছাত্র রাজনীতির কারণে ছাত্ররা বই-কলমের পরিবর্তে হাতে তুলে নিচ্ছে অস্ত্র। সেবন করছে মরণঘাতী হেরোইন, ফেন্সিডিল, মদ, গাঁজা প্রভৃতি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়য়ের আবাসিক হলগুলো অস্ত্রের ঝনঝনানিতে কাঁপছে, ক্যম্পাস হচ্ছে রক্তে রঞ্জিত। দলীয় কোন্দলে নিহত হচ্ছে মেধাবী ছাত্রছাত্রী। খালি হচ্ছে অসহায় মা-বাবার বুক। লাঞ্ছিত হচ্ছেন মানুষ গড়ার শিক্ষকগণ। দেশের প্রচিলত রাজনীতিতে মেধার চেয়ে পেশীশক্তিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। আজকের মেধাবী ছাত্ররাই যে ভবিষ্যতে দেশের বিচিক্ষণ রাজনীতিবিদ, ভালো ডাক্তার এবং প্রকৌশলী হবে – এ ধরণের কোনো সুযোগ বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলোর নেই। নেই জীবন গঠনমূলক কোনো সঠিক পরিকল্পনা। যেসব মেধাবী ছাত্র এসএসসীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে সেসব ছাত্রই কলেজে ভর্তি হয়ে নোংরা ছাত্র রাজনীতিতে জড়িত হয়ে পরিক্ষায় ফেল করেছে। তাই বর্তমান রাজনীতিতে ছাত্রদের সুফলের তুলনায় কুফলই বেশি। তুমি সবেমাত্র দশম শ্রেণীর ছাত্র। এখন তোমার উচিত রুটিন মোতাবেক একাগ্রচিত্তে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া। এখন রাজনীতিতে তোমার সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ না করাই শ্রেয়। অথচ তুমি রাজনীতির অর্থহীন চর্চায় মূল্যবান সময় অপচয় করছ। স্বার্থবাদী রাজনীতির স্বার্থান্বেষি ছোবলে তোমার মূল্যবান ও অমিত সম্ভাবনাময় জীবন ধ্বংস হোক – তা আমাদের কারোরোই কাম্য নয়। রাজনীতি ত্যগ করে নিয়মিত পড়াশুনায় মনোনিবেশ করবে এটাই প্রত্যাশা।

শরীরের প্রতি যত্ন নিও। বাড়ির বড়দের প্রতি সালাম এবং ছোটদের স্নেহ দিয়ে শেষ করছি। তোমার সর্বাজ্ঞীণ কল্যাণ কামনায়…

 

ইতি

তোমার বড় ভাই

“ক”

সংযুক্তিঃ ডাকটিকেট 

Post a Comment

Support Us