বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখ

 বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়ে তোমার বন্ধুর কাছে একটি চিঠি লেখ।

Natural Beauty  of Bangladesh, Bangladesh, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য


ঢাকা, বাংলাদেশ

২২ মার্চ ২০২৩ ইং

প্রিয় ‘ম’

আমার আন্তরিক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা নিও। আশা করি মাতৃভূমির গভীর ভালোবাসার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে তোমার নানা রঙের দিনগুলো। অনেক দিন পর গতকাল তোমার হাতের একখানা পত্র পেলাম। আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা জানতে চেয়েছ বলে তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তোমার অবগতির জন্যই আজকের লেখা।

প্রথমেই বলে রাখছি, আমার দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের ভাষায় দেওয়া সম্ভব নয়। তবু তোমার সন্তুষ্টির জন্য আমি কিছু কিছু দিক তুলে ধরার চেষ্টা করব। মনীষী ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন “মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমি – এ তিনটি” বস্তু সবার কাছে প্রিয়। আমার কাছে অধিক প্রিয় আমার মাতৃভূমি বাংলাদেশ। সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা আমার এ বাংলাদেশ। এদেশের বিভিন্ন ঋতুতে মাঠে ফলে সোনার ফসল, গাছে গাছে দেখা যায় ফুল ও ফল এবং নদীতে চলে পালতোলা নৌকা। এখানকার চাষীরা মাটির বুক চিরে সম্পদ আহরণ করে, জেলেরা নদীতে জাল ফেলে রুপালি মাছ ধরে এবং মাঝিরা নৌকার পাল তুলে দিয়ে গান ধরে – “মনমাঝি তোর বৈঠা নে রে আমি আর বাইতে পারলাম না” এসব নয়নাভিরাম দৃশ্য হৃদয় মনে আনে আনন্দের বন্যা। এদেশকে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন “সোনার বাংলা”, জীবনানন্দ দাশ বলেছেন “রূপসী বাংলা” এবং কাজী নজরুলের “এই  বাংলাদেশ”। মধ্যযুগের বিদেশি পর্যটকরা এর নাম দিয়েছেন ‘স্বর্গের দরজা’। আমার প্রিয় জন্মভূমির অনেক বর্ণনা, অনেক প্রশংসা ইতিহাসে, কিংবদন্তীতে ছড়িয়ে আছে। অতি প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশ ছিল একদিকে অফুরন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, অন্যদিকে প্রাচুর্যের মহাভান্ডার। রাশি রাশি ফুল-ফল, শস্যভরা ক্ষেত-খামার এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার ঘটায়। হাজারো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ঝোপঝাড়-অরন্যানী নদি, মেখলা জড়িয়ে যেন পাহাড়ি কন্যার মতো সগর্বে হেঁটে বেড়ায় এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার ঘটায়। বাংলার বিচিত্র প্রকৃতি মানুষকে কখনো বাউল, কখনো কবি এবং কখনো সংগ্রামী কৃষক। আমার দেশ ঋতুরাজ বসন্তের দেশ। বসন্তে নবপরিণীতা বর-কনের মতো নানান সাজে সজ্জিত হয় এখানকার প্রকৃতি। গাছের ডালে মনের সুখে গান গায় দোয়েল, কোকেল, শ্যামা, পাপিয়া। বর্ষা এসে পা ধুইয়ে দিয়ে যায় প্রকৃতির। আবার হেমন্ত আসে নবান্নের সৌরভ নিয়ে। তাই তো এদেশের রূপ-সৌন্দর্য বিমোহিত হয়ে কবি বলেছেন –


এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।


আমার বিশ্বাস, উপরিউক্ত বর্ণনা পড়ে তুমি আমার দেশটির রুপ-সৌন্দর্য সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা পাবে। তবুও আগামী গ্রীষ্মের ছুটিতে তোমাকে স্বচক্ষে আমার দেশটি দেখার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। প্রতিউত্তরে তোমার দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা জানিয়ে সুখী করো।

ইতি

তোমার গুণমুগ্ধ

‘হ’

Post a Comment

Support Us