ভূমিকাঃ গরু গৃহপালিত চতুস্পদ প্রাণী। গরু জাতি অনুসারে বিভিন্ন
রং এবং আকৃতির হয়ে থাকে। এরা সাধারণত খুবই শান্ত ও নিরীহ প্রকৃতির। আদিকাল থেকে মানুষ
গরু লালন-পালন করে আসছে। আমাদের দৈনিন্দন জীবনে গরুর উপকারিতা অনস্বীকার্য। গরু এতটাই
উপকারী প্রাণী যে, প্রত্যেকের নিকট এটি দারুণভাবে সমাদৃত।
বর্ণনাঃ গরু স্তন্যপায়ী ও তৃণভোজী। এরা ছয়
থেকে আট ফুট লম্বা ও চার থেকে ছয় ফুট উঁচু হয়। এদের শরীর ঘন লোমে ঢাকা। গরুর চারটি
পা, দুইটি কান, দুটি শিং ও দুটি চোখ আছে। গরুর পিছনে একটি লম্বা লেজ আছে। লেজের শেষপ্রান্তে
একগুচ্ছ চুল আছে। গরু লেজের সাহায্যে মশ-মাছি তাড়ায়।
প্রকৃতি ও স্বভাবঃ গরু খুব শান্ত ও নিরীহ
প্রাণী। এরা সহজেই পোষ মানে। অন্যের ক্ষতি করে না। গাভী ৪/৫ বছর বয়স থেকে প্রতি বছর
একটি করে বাচ্চা দেয়। এরা বাচ্চাদের প্রতি যত্ন নেয়। গরু যে কোনো খাদ্য প্রথমে না চিবিয়ে
গিলে ফেলে। পরে অবসর সময়ে তা পুনুরায় মুখে এনে চিবিয়ে খায়। একে জাবর কাটা বলে। এরা
গড়ে ১৫ থেকে ২০ বছর বেঁচে থাকে।
প্রাপ্তিস্থানঃ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই গরু
পাওয়া যায়। রাশিয়া, মিশর, পাকিস্তান ও ইংল্যান্ডের গরু খুবই শক্তিশালী। তাছাড়া ষাঁড়ের
লড়াই ফ্রান্সের জাতীয় খেলা হিসেবে বিবেচিত।
উপকারিতাঃ মানুষের উপকারী প্রাণীদের মধ্যে
গরু অন্যতম। গরু নানাভাবে আমাদের উপকার করে। ষাঁড় ও বলদ লাঙ্গল ও গাড়ি টানে। গাভী দুধ
দেয়। দুধ পুষ্টিকর খাবার। দুধ দিয়ে ছানা, ঘি, মাখন, পনির ও সুস্বাদু খাবার তৈরি হয়।
গরুর গোবর একটি উৎকৃষ্ট সার এবং জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার হয়। গরুর চামড়া দিয়ে জুতা,
ব্যাগ এবং হাড় দিয়ে চিরুনি ও সার তৈরি হয়।
উপসংহারঃ গরু মানুষের জন্য তখনই সর্বাধিক
উপকারী প্রাণী হয়ে উঠবে যখন এর সার্বিক ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে। এর থেকে উপকার পেতে
হলে আমাদের এদের প্রতি যত্নবান হতে হবে। গরুর বাসস্থান, খাদ্য, রোগবালাই ইত্যাদির প্রতি
আমাদের বিশেষ নজর রাখতে হবে।
উপযোগী শ্রেণীঃ চতুর্থ, পঞ্চম