প্রিয় শিক্ষার্থীবন্ধুরা, আশা করি ভালো আছো। আজকের এই ব্লগে আমি তোমাদের মাঝে তৃতীয় শ্রেণির “প্রাথমিক বিজ্ঞান” বইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায় ‘জীব ও জড়’ এর হ্যান্ডনোট শেয়ার করবো। আশা করি তোমাদের ভালো লাগবে এবং এই হ্যান্ডনোট টি ঠিকমতো আয়ত্ত্ব করতে পারলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ্। তাহলে শুরু করা যাক –
পাঠ্যবইয়ে দেওয়া প্রশ্ন ও কাজগুলোর সমাধান –
প্রশ্নঃ জীব ও জড় বলতে বুঝায়? (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা নং - ৬)
উত্তরঃ
জীবঃ যাদের শরীরের বৃদ্ধি
ও পরিবর্তন ঘটে তাদের জীব বলা হয়। জীব নিজের
মতো নতুন জীবের জন্ম দেয় এবং বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য, পানি এবং বায়ুর প্রয়োজন হয়।
জড়ঃ যাদের জীবন নেই তাদের
জড় বলে। জড় খাবার খায় না, পানি পান করে না, বৃদ্ধি
পায় না। এরা নিজের মতো অন্য
কোনো বস্তু তৈরি করতে পারে না।
কাজঃ জীব ও জড়ের তালিকা তৈরি
কর? (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা নং - ৬)
সমাধানঃ পাঠ্যাবইয়ে দেখানো ছকের মতো আমার খাতায় একটি ছক আঁকলাম।
আমার শ্রেণিকক্ষের ভেতরের
ও বাইরে জীব এবং জড় লক্ষ করলাম।
শ্রেণিকক্ষের ভেতরে ও বাইরে
যে যে জীব এবং জড় লক্ষ করেছি তা দুই ভাগে সাজিয়ে নিচে দেওয়া হলো –
শ্রেণিকক্ষের ভেতরে |
জীব |
জড় |
ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা |
চেয়ার, টেবিল, ব্ল্যাকবোর্ড, চক, বেঞ্চ, বই, খাতা, কলম, রাবার, পেনসিল। |
|
শ্রেণিকক্ষের বাইরে |
গাছাপালা, ছাগল,
ফুলের বাগান |
জাতীয় পতাকা, চেয়ার, টেবিল, আলমারি। |
অতঃপর আমার কাজ নিয়ে আমার
সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলাম।
প্রশ্নঃ জীব এবং জড়ের মধ্যে
পার্থক্য কী? (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা
নং - ৭)
উত্তরঃ পাঠ্যবইয়ে দেখানো
ছকের মতো আমার খাতায় একটি ছক তৈরি করে জীব ও জড়ের মধ্যে পার্থক্য নিচে লিখলাম –
জীব |
জড় |
১. জীবের জীবন আছে |
১. জড় পদার্থের জীবন নেই |
২. এটি খাবার খায়। |
২. এটি খাবার
খায় না। |
৩. এটির বৃদ্ধি হয়। |
৩. এটির বৃদ্ধি হয় না। |
৪. এটি চলাফেরা করতে পারে। |
৪. এটি চলাফেরা
করতে পারে না। |
৫. জীবের মৃত্যু হয়। |
৫. জড়ের মৃত্যু নেই। |
অতঃপর আমার এই ছকের কাজ নিয়ে
আমার সহপাঠিদের সাথে আলোচনা করলাম।
প্রশ্নঃ উদ্ভিদ ও প্রাণি
কীভাবে চেনা যায়। (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা নং - ৮)
উত্তরঃ উদ্ভিদ ও প্রাণীর
বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ –
উদ্ভিদ |
প্রাণী |
১. উদ্ভিদ মূলের সাহায্যে মাটিতে আটকে থাকে। |
১. প্রাণী নিজের ইচ্ছামতো চলাচল করতে পারে। |
২. উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করতে পারে। |
২. প্রাণীরা
নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। |
৩. উদ্ভিদ দেখতে পায় না, শুনতে পায় না এবং ঘ্রাণ নিতে পারে
না। |
৩. এরা দেখতে পায়, শুনতে পায় এবং স্বাদ নিতে পারে। |
৪. প্রাণীর মতো উদ্ভিদ খাবার খায় না। |
৪. প্রাণীরা
খাদ্যের জন্য উদ্ভিদ বা অন্য প্রাণী খেয়ে থাকে। |
৫. উদ্ভিদ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করতে পারে না। |
৫. প্রাণীরা পা, ডানা বা পাখনা দ্বারা চলাচল করে। |
অতঃপর আমার কাজ নিয়ে আমার
সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলাম।
কাজঃ বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ।
সমাধানঃ পাঠ্যবইয়ে দেখানো
চিত্রগুলোর বৈশিষ্ট্য নিচের ছকে লিপিবদ্ধ করলাম –
উদ্ভিদের নাম |
আকার |
কান্ড শক্ত না নরম |
ফুল ফোটে কিনা |
শাপলা |
ছোট |
নরম |
ফুল ফোটে |
জবা |
মাঝারি |
শক্ত |
ফুল ফোটে |
আম |
দীর্ঘ |
শক্ত |
ফুল ফোটে |
মরিচ |
ছোট |
নরম |
ফুল ফোটে |
ঢেঁকিশাক |
ছোট |
নরম |
ফুল ফোটে |
ধান |
ছোট |
নরম |
ফুল ফোটে |
মস |
ছোট |
নরম |
ফুল ফোটে না |
মাশরুম |
ছোট |
নরম |
ফুল ফোটে না |
অতঃপর আমার কাজ নিয়ে আমার
সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলাম।
প্রশ্নঃ কোন প্রাণীর মেরূদন্ড
আছে?
উত্তরঃ পাঠ্যবইয়ে দেখানো
ছকের মতো ছক তৈরি করে আমার জানা কয়েকটি মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী প্রাণীর নাম লিখলাম –
অমেরুদন্ডী |
মেরুদন্ডী |
কেঁচো, চিংড়ি, প্রজাপতি, ফড়িং, মশা, মাছি, শামুক ইত্যাদি। |
মানুষ, গরু, ছাগল, কুকুর,
ব্যাঙ, বিড়াল, সাপ,
হাঁস, মুরগি ইত্যাদি। |
অতঃপর আমার কাজ নিয়ে আমার
সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলাম।
“জীব
ও জড়” এর অনুশীলনীর প্রশ্ন ও উত্তর –
১. শূন্যস্থান পূরণ কর –
১. জীব এবং জড় মিলেই
আমাদের পরিবেশ।
২. জীবের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য,
পানি এবং বায়ু প্রয়োজন।
৩. চিংড়ি এবং কেঁচো অমেরুদন্ডী
প্রাণী।
৪. মানুষ উদ্ভিদ এবং
প্রাণীর উপর নির্ভরশীল।
২. সঠিক উত্তরটিতে টিক (✔) চিহ্ন দাও –
১. নিচের কোনটি জীব?
✔ মরিচ গাছ।
২. কোনটি বৃদ্ধি পায়?
✔ কবুতর
৩. নিচের কোনটি অপুষ্পক উদ্ভিদ?
✔ ঢেঁকিশাক।
৩. নিচের প্রশ্নগুলো উত্তর দাও
–
প্রশ্ন-১ । জীব ও জড়ের পাঁচটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ জীব ও জড়ের পাঁচটি উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো –
জীবঃ মানুষ, গরু, মাছ, উদ্ভিদ, পাখি।
জড়ঃ গাড়ি, চেয়ার, টেবিল, বই, মাটি।
প্রশ্ন-২ । মেরুদণ্ডী প্রাণীদের কী কী শ্রেণীতে ভাগ করা যায়?
উত্তরঃ মেরুদন্ডী প্রাণীদের নিচের পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা –
- মাছ,
- উভচর,
- সরীসৃপ,
- পাখি ও
- স্তন্যপায়ী।
প্রশ্ন-৩ । আকার ও কান্ড অনুযায়ী উদ্ভিদকে কীভাবে শ্রেণিবিন্যাস
করা যায় লেখ?
উত্তরঃ আকার ও কান্ড অনুযায়ী উদ্ভিদকে তিন শ্রেণিতে বিন্যাস করা যায়। যথা – বৃক্ষ, গুল্ম ও বিরুৎ।
বৃক্ষঃ যেসব উদ্ভিদের কান্ড মোটা, দীর্ঘ ও শক্ত এবং কান্ড থেকে শাখাপ্রশাখা ও পাতা হয় তাদেরকে বৃক্ষ বলে। যেমন – আম, কাঁঠাল, বেল ইত্যাদি।
গুল্মঃ যেসব উদ্ভিদের কান্ড শক্ত কিন্তু বৃক্ষের মতো দীর্ঘ ও মোটা নয় এবং কান্ডের
গোড়ার কাছ থেকে শাখাপ্রাশাখা বের হয় তাদেরকে গুল্ম বলে। যেমন – গোলাপ, জবা ইত্যাদি।
বিরুৎঃ যেসব উদ্ভিদ গুল্ম উদ্ভিদের চেয়ে আকারে ছোট এবং কান্ড নরম তাদেরকে বিরুৎ
শ্রেণির উদ্ভিদ বলে। যেমন – ধান, সরিষা, মরিচ ইত্যাদি। সাধারণত
এদের শেকড় মাটির গভীরে যায় না।
প্রশ্ন-৪। মানুষ কীভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভরশীল?
উত্তরঃ মানুষ বিভিন্নভাবে উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল। যেমন – বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান অক্সিজেন ও খাদ্য। যা আমরা উদ্ভিদের কাছ থেকে গ্রহণ করি। এছাড়া মানুষ যে পোশাক পরে তা উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ
থেকে তৈরি হয়। ঘরবাড়ি এবং আসবাবপত্র
নির্মাণে উদ্ভিদের কাঠ ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন-৫। উদ্ভিদ এবং প্রাণীর তিনটি পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ উদ্ভিদ এবং প্রাণির মধ্যে তিনটি পার্থক্য নিচে দেওয়া হলো –
উদ্ভিদ |
প্রাণী |
১. উদ্ভিদের মূল, কান্ড, শাখাপ্রশাখা, পাতা ইত্যাদি আছে। |
১. প্রাণীদের চোখ, কান, নাক, মুখ ইত্যাদি আছে। |
২. উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজেই তৈরি করতে পারে। |
২. প্রাণী নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। |
৩. উদ্ভিদ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করতে পারে। |
৩. প্রাণী নিজের ইচ্ছামতো এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করতে
পারে। |
৪। নিচের ছকে উল্লেখ করা
প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো ছকে লেখ।
উত্তরঃ ছকে উল্লেখ করা প্রাণীদের বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নে ছকে লেখা হলো –
নাম |
কোথায় বাস করে |
দেহ কী দিয়ে ঢাকা থাকে |
কীভাবে চলাচল করে |
গরু |
স্থলে বাস করে। |
লোম দিয়ে ঢাকা থাকে। |
পায়ের সাহায্যে
চলাচল করে। |
দোয়েল |
গাছে বাস করে। |
পালক দিয়ে ঢাকা থাকে। |
ডানা মেলে উড়তে পারে। |
রুই |
পানিতে বাস করে। |
আঁইশ দিয়ে ঢাকা
থাকে। |
পাখনা নেড়ে এরা
চলাচল করে। |
টিকটিকি |
স্থলে বাস করে। |
শুষ্ক ও আঁইশযুক্ত থাকে। |
পায়ের সাহায্যে চলাচল করে। |
কচ্ছপ |
জলে ও স্থলে বাস
করে। |
খোলস দিয়ে ঢাকা
থাকে। |
পা ও বুকের উপরে
ভর করে চলাচল করে। |
তথ্যসূত্রঃ
- বইঃ প্রাথমিক বিজ্ঞান (তৃতীয় শ্রেণি)
- পাঠঃ জীব ও জড় (অধ্যায় - ২)
- পৃষ্ঠা – ৬ থেকে ১৫
আশা করি তোমরা পুরো পোষ্টটি যত্ন সহকারে পড়েছ এবং উপকৃত হয়েছ। আর এটাই আমার সার্থকতা। পোষ্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে শেয়ার এবং কমেন্ট করতে ভুলবে না। আজ আর নয়, কথা হবে অন্য কোন দিন এবং নতুন কোন পাঠে। ঐ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকো এবং সুস্থ থাকো। আল্লাহ হাফেয।