প্রিয় শিক্ষার্থীবন্ধুরা, আশা করি ভালো আছো। আজকের এই ব্লগে আমি তোমাদের মাঝে তৃতীয় শ্রেণির “প্রাথমিক বিজ্ঞান” বইয়ের ষষ্ঠ অধ্যায় ‘বায়ু’ এর হ্যান্ডনোট শেয়ার করবো। আশা করি তোমাদের ভালো লাগবে এবং এই হ্যান্ডনোট টি ঠিকমতো আয়ত্ত্ব করতে পারলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ্। তাহলে শুরু করা যাক –
এই অধ্যায়ের আলোচ্য বিষয় –
বায়ু পরিবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বায়ু গ্যাসের একটি মিশ্রণ। বায়ুতে প্রধানত নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন-ডাইক্সাইড ও জলীয় বাস্প, আর্গন ইত্যাদি রয়েছে। শ্বাস গ্রহণের জন্য আমরা বায়ু থেকে অক্সিজেন গ্রহণ
করি। আমরা যে খাদ্য খাই তা
ভেঙ্গে শক্তি উৎপাদিত হয়। এই ভাঙনের
জন্য অক্সিজেনের দরকার হয়। বায়ুর নাইট্রোজেন
বিভিন্নভাবে মাটিতে মিশে। মাটির নাইট্রোজেন
উদ্ভিদের পাতার সবুজ অংশ তৈরি করে। কার্বন-ডাইওক্সাইড আর পানি থেকে উদ্ভিদের পাতার সবুজ
অংশে তৈরি হয় খাদ্য। বায়ুর উপাদানগুলো
নানাভাবে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য প্রয়োজনীয়। তাই বায়ুতে ক্ষতিকর কিছু মিশলে বায়ু দূষিত হয়। এই দূষিত বায়ু উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর।
পাঠ্যবইয়ে দেওয়া প্রশ্ন ও কাজগুলোর সমাধান –
প্রশ্নঃ বায়ুর উপস্থিতি অনুভব করা। (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা নং - ৩৬)
কাজ – ১ / সমাধানঃ
- বায়ুর উপস্থিতি অনুভব করার জন্য প্রথমে একটি পলিথিন ব্যাগ নিই।
- এরপর পলিথিন ব্যাগে বায়ু ভর্তি করে মুখ সুতা দিয়ে বাঁধি।
- এখন বাতাসে ফুলানো ব্যাগটি ছুড়ে দিলে সেটি ছোটাছুটি করে।
- হাত দিয়ে বাতাসে ফুলানো ব্যাগটিতে চাপ দিলে ও আঘাত করলে সেই ব্যাগ হতেও পাল্টা আঘাত ও চাপ অনুভূত হয়। এভাবেই বায়ুর উপস্থিতি অনুভব করা যায়।
কাজ – ২ / সমাধানঃ বায়ুর উপস্থিতি অনুভব করার জন্য প্রথমে একটি পলিথিন ব্যাগ নিই। এরপর পলিথিন ব্যাগে বায়ু ভর্তি করে মুখ সুতা দিয়ে বাঁধি।
- এরপর বায়ুভর্তি ব্যাগটি চিত্রের মতো পানিতে ডুবাই।
- এখন সুতা দিয়ে বাঁধা ব্যাগের মুখ খুলে দিই।
- পানির ভেতরে ব্যাগ থেকে বায়ু বুদবুদ হয়ে উপরে উঠে আসে। এভাবেই বায়ুর উপস্থিতি অনুভব করা যায়।
কাজঃ বায়ুতে আগুন জ্বলে। (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা নং - ৩৮)
সমাধানঃ
- পাঠ্যবইয়ের দেখানো ছকের মতো একটি ছক তৈরি করলাম।
- বোতল দুইটির ভেতরে তলদেশে মোমবাতি বসালাম।
- মোমবাতি জ্বালালাম এবং কিছু সময় ধরে জ্বলতে দিলাম।
- পাঠ্যবইয়ে দেখানো বোতল ‘ক’ এর মুখে ঢাকনা দিলাম এবং বোতল ‘খ’ এর মুখ খোলা রাখলাম।
- শিক্ষকের সহযোগিতায় একজন শিক্ষার্থী একটি আগরবাতি জ্বালিয়ে বোতল ‘ক’ এর মুখের ওপরে খুব কাছে ধরল। আর একজন শিক্ষার্থী আরেকটি আগরবাতি জ্বালিয়ে বোতল ‘খ’ এর মুখের ওপরে খুব কাছে ধরল।
- বোতল দুইটির মধ্যে মোমবাতি জ্বালা এবং ধোঁয়া কোন দিকে যায় তা লক্ষ করলাম।
পাঠ্যবইয়ে দেখানো আমি যা দেখলাম তা ছকে লেখা হলে –
বোতল |
মোমবাতির যেসব পরিবর্তন হয়েছিল |
আগরবাতির ধোঁয়া যে দিকে যাচ্ছিল |
ক |
মোমবাতি নিভে গিয়েছিল। |
ধোঁয়া বোতলের ভিতরে
ঢুকবে না। |
খ |
মোমবাতি জ্বলছিল। |
ধোঁয়া বোতলের ভিতরে ঢুকবে। |
আলোচনা – আমরা বায়ু কীভাবে ব্যবহার করি? (পাঠ্যবইয়ের পৃষ্ঠা নং - ৪০)
উত্তরঃ নিচের ছকে বায়ুর ব্যবহার বর্ণনা করা হলো –
আমাদের জীবনে বায়ুর ব্যাবহার |
|
অক্সিজেন |
১. জীবের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। ২. অক্সিজেন আগুন জ্বালাতে সাহায্য করে। |
কার্বন-ডাইঅক্সাইড |
১. উদ্ভিদের খাদ্য তৈরিতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড ব্যবহৃত হয়। ২. কোমল পানীয় তৈরিতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড ব্যবহৃত হয়। ৩. আগুন নিভাতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড ব্যবহৃত হয়। |
নাইট্রোজেন |
১. উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সার তৈরিতে নাইট্রোজেন লাগে। ২. বৈদ্যুতিক বাল্ব ও চিপস জাতীয় খাদ্যের প্যাকেটে নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়। |
অবশেষে আমার কাজ নিয়ে সহপাঠীদের সাথে আলোচনা করলাম।
“বায়ু” এর অনুশীলনীর
প্রশ্ন ও উত্তর –
১. শূন্যস্থান পূরণ কর –
১. গাড়ির ধোঁয়া বায়ু
দূষিত করে।
২. বৈদ্যুতিক বাতিতে নাইট্রোজেন
ব্যবহার করা হয়।
৩. আগুন নিভাতে কার্বন-ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করা হয়।
৪. গাড়ির চাকায় বায়ু
ব্যবহার করা হয়।
৫. পায়ে হেঁটে বা সাইকেল চড়ে বায়ুদূষণ
করা যায়।
২. সঠিক উত্তরটিতে টিক (✔) চিহ্ন দাও –
১. উদ্ভিদ কার্বন-ডাইঅক্সাইড কী কাজে ব্যবহার করে?
✔ খাদ্য তৈরি।
২. প্রাণীর শ্বাসকার্যে কোন গ্যাস
প্রয়োজন?
✔ অক্সিজেন
৩. সারের কোন উপাদান উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে
সহায়ক?
✔ নাইট্রোজেন
৩. নিচের প্রশ্নগুলো উত্তর দাও
–
প্রশ্ন-১। আমাদের চারপাশে বায়ু আছে এমন তিনটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ আমাদের চারপাশে বায়ু থাকলেও আমরা বায়ু দেখতে পাই না। তবে বায়ুর উপস্থিতি বুঝা যায়, এমন তিনটি উদাহরণ হলো –
- হাতাপাখা ব্যবহার করলে বায়ুর উপস্থিতি বুঝা যায়।
- বাতাসের কারণে গাছের ডালপালা ও পাতা নড়ে।
- বৈদ্যুতিক পাখা চালালে আমাদের গায়ে বাতাস লাগে।
প্রশ্ন-২। বায়ুর চারটি উপাদানের নাম লেখ।
উত্তরঃ বায়ু একটি মিশ্র পদার্থ। বায়ুর চারটি
উপাদানের নাম হলো –
- অক্সিজেন
- কার্বন-ডাইঅক্সাইড,
- নাইট্রোজেন,
- জলীয় বাস্প।
প্রশ্ন-৩। বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করার তিনটি উপায় লেখ।
উত্তরঃ বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করার তিনটি উপায় হলো –
- পায়ে হেঁটে অথবা সাইকেলে চলাচল করতে হবে।
- ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
- গাড়ির কালো ধোঁয়া রোধ করতে হবে।
৪. বামপাশের শব্দের সঙ্গে ডানপাশের
শব্দের মিল কর –
- সার নাইট্রোজেন।
- আগুন নেভানো কার্বন-ডাইঅক্সাইড।
- প্রাণীর শ্বাস গ্রহণ অক্সিজেন।
- আলুর চিপসের প্যাকেট নাইট্রোজেন।
- সোডা জাতীয় কোমল পানীয় কার্বন-ডাইঅক্সাইড।
তথ্যসূত্রঃ
- বইঃ প্রাথমিক বিজ্ঞান (তৃতীয় শ্রেণি)
- পাঠঃ বায়ু (অধ্যায় - ৬)
- পৃষ্ঠা – ৩৬ থেকে ৪২
আশা করি তোমরা পুরো পোষ্টটি যত্ন সহকারে পড়েছ এবং উপকৃত হয়েছ। আর এটাই আমার সার্থকতা। পোষ্টটি যদি ভালো লাগে তাহলে শেয়ার এবং কমেন্ট করতে ভুলবে না। আজ আর নয়, কথা হবে অন্য কোন দিন এবং নতুন কোন পাঠে। ঐ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকো এবং সুস্থ থাকো। আল্লাহ হাফেয।