শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির
লিখে রেখ এক ফোঁটা দিলেম শিশির।
পৃথিবীতে এমন কিছু লোক আছে, যারা উপকারীর
উপকার স্বীকার করে না। বরং তারা সামান্য উপকার করতে পারলেই, দম্ভভরে তা প্রচার করে
বেড়ায়।
দিঘির বিশাল জলরাশির মধ্যে শৈবালের অবস্থান
ও অস্তিত্ব। এই শৈবালের ওপর জমেছে ভোরের শিশির। শিশিরের ক্ষুদ্র ফোঁটা গড়িয়ে পড়েছে
দিঘির অগাধ জলে। এই সামান্য শিশির-ফোঁটাকে শৈবাল দিঘির প্রতি তার মহৎ দান বলে গন্য
করেছে। অথচ দিঘির বিশাল জলরাশির কাছে এক ফোঁটা শিশির অতি তুচ্ছ। দিঘির জলেই যার অস্তিত্ব,
সেই দিঘির প্রতি শৈবালের এমন দম্ভোক্তি সত্যি হীনম্মন্যতার পরিচায়ক।
শৈবালের মতো মানবসমাজেও এমন অনেক অকৃতজ্ঞ
লোক আছে, যারা পরের দয়া-দাক্ষিণ্য দুহাতে গ্রহণ করে কিন্তু সামান্য উপকার করতে পারলেই
মনে করে আমি মহৎ কিছু করে ফেলেছি। প্রকৃতপক্ষে যিনি মহৎ এবং যথার্থ পরোপকারী তিনি অপরের
উপকার করে কখনো দম্ভ প্রকাশ করেন না। নিছক আত্মপ্রচারের জন্য নয় বরং নিঃস্বার্থভাবেই
তিনি পরের উপকার করেন।
প্রতিদানের প্রত্যাশা নয়, মানবকল্যাণের জন্য
নিঃস্বার্থভাবে পরের উপকার করাই মহৎপ্রাণ ব্যক্তির কাজ।