“বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ” পালনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তোমার বন্ধুর নিকট একটি
পত্র রচনা কর।অথবা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালনের প্রয়োজনোয়তা সম্পর্কে তোমার বন্ধুর নিকট
একটি পত্র লেখ।অথবা, তোমার কলেজে বৃক্ষরোপণ অভিযান কীভাবে পালন করেছ তা জানিয়ে বন্ধুর
নিকট একটি পত্র লেখ।
কচুয়া, চাঁদপুর
১৫ জুন, ২০২২
প্রিয় “ম”
শুভেচ্ছা রইল। আশা করি ভালো আছো। তুমি জেনে
খুশি হবে যে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও আমাদের কলেজে খুব উৎসাহ – উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে
বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ পালন করা হয়। এ অভিযানের অংশ হিসেবে মাননীয় অধ্যক্ষ মহোদয় সকাল দশটায়
সর্বপ্রথম সেগুন বৃক্ষের চারা রোপণ করে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহের উদ্বোধন করেন। তারপর আমরা
কলেজের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী বৃক্ষরোপণ অভিযানে অংশগ্রহণ করি। এ অভিযানে আগামী এক সপ্তাহ
পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
অবাধে বৃক্ষনিধনের কারণে আজ বিশ্ব পরিবেশ
ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। একটি দেশের মোট ভূখন্ডের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা আবশ্যক।
অথচ আমাদের দেশে এর পরিমাণ মাত্র ১৭ ভাগ। নির্মল বায়ু সেবনের জন্য বৃক্ষের বিকল্প নেই।
তুমি তো জানো, আমরা যে অক্সিজেন গ্রহণ করি তা বৃক্ষ থেকে পাই। পক্ষান্তরে, যে বিষাক্ত
কার্বন ডাই-অক্সাইড ত্যাগ করি তা বৃক্ষ গ্রহণ করে। এই বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড বৃক্ষ
গ্রহণ না করলে বায়ুমন্ডল মারাত্মকভাবে দূষিত হয়ে মনুষ্য বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়তো।
তখন নির্মল বায়ু সেবন করা দূরে থাক জীবনধারণই কঠিন হয়ে পড়তো। আধুনিক শিল্পায়নের ধারায়
বাংলাদেশেও গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা। এসব শিল্প-কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া, গাড়ি,
লঞ্চ, স্টিমারের কালো ধোঁয়া বায়িমন্ডলকে প্রতি মুহুর্তে বিষাক্ত করে তুলছে। এমতাবস্থায়
যদি প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ না করা হয় তাহলে সুস্থ নির্মল বায়ু সেবন করা সম্ভব হবে
না। ফলে বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে শতকরা একশ ভাগ। তাই
অধিক পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করলে একদিকে যেমন জীবনরক্ষাকারী অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত হবে
তেমনি অন্যদিকে আসবে আর্থিক সাশ্রয়। কেননা গাছ নানাভাবে আমাদের উপকার করে থাকে। আসবাবপত্র
তৈরি ও গৃহনির্মাণের জন্য কাঠ অত্যাবশ্যক। সর্বোপরি গাছ আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের
অন্যতম উপাদান। সুতরাং দেশে বন সৃষ্টি ও অধিক বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। কাজেই বৃক্ষরোপণ
সপ্তাহ পালন করে যদি আমরা প্রয়োজনীয় কাঠ ও ফল উৎপাদনে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে
পারি তবে নিঃসন্দেহ নিজেরাও ধীরে ধীরে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারবো।
পরিশেষে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ উপলক্ষে তোমাদের
কলেজে থেকে কী ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল তা জানিয়ে চিঠি লিখলে খুশি হবো। তোমার সর্বময়
মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
ইতি
তোমার গুণমুগ্ধ
“এ”